জাফলং খাসিয়া পল্লীর ইতিহাস: এক নজরে
জাফলং, সিলেটের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত হলেও, এর ইতিহাসও কম আকর্ষণীয় নয়। বিশেষ করে খাসিয়া পল্লীর সাথে জড়িয়ে থাকা জাফলংয়ের ইতিহাস।
প্রাচীনকাল:
- খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যের অধীনে: হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা রাজার অধীন একটি নির্জন বনভূমি।
- নির্জনতা: ১৯৫৪ সালে জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটলেও, জাফলং বেশ কয়েক বছর পতিত পড়ে ছিল।
পাথর ব্যবসা ও জনবসতি:
- পাথরের আকর্ষণ: ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন।
- নতুন জনবসতি: পাথর ব্যবসার প্রসারের সাথে সাথে জাফলংয়ে নতুন জনবসতি গড়ে ওঠে।
আধুনিক যুগ:
- সড়ক যোগাযোগ: আশির দশকে সিলেটের সাথে জাফলংয়ের সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
- পর্যটকদের আগমন: এরপর থেকে জাফলংয়ের সৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশী-বিদেশী পর্যটকরা ভিড় করতে শুরু করে।
- পর্যটন কেন্দ্র: জাফলং এখন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
খাসিয়া পল্লীর প্রভাব:
- আদিবাসী সংস্কৃতি: জাফলংয়ের সৌন্দর্যে খাসিয়া আদিবাসীদের জীবনধারা একটি অনন্য মাত্রা যোগ করেছে।
- পানবরজ ও কমলা বাগান: খাসিয়া পল্লীতে দেখা যায় পানবরজ, কমলা বাগান এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী ঘর।
- মাতৃতান্ত্রিক সমাজ: খাসিয়া সম্প্রদায় মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা অনুসরণ করে।
জাফলংয়ের অন্যান্য আকর্ষণ:
- পিয়াইন নদী: পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়।
- ডাউকি ব্রীজ: সীমান্তের ওপারে ডাউকি নদীর ওপরে ঝুলন্ত সেতু জাফলংয়ের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে।
- পাহাড় ও ঝর্না: পাহাড়, পানি, ঝরনা সব মিলিয়ে জাফলং যেন এক রূপকথার রাজ্য।
সারসংক্ষেপ:
জাফলং খাসিয়া পল্লীর ইতিহাস হলো প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের একটি মিশেলে গড়ে ওঠা এক অনন্য গল্প। খাসিয়া আদিবাসীদের জীবনধারা, পাথর ব্যবসার উত্থান এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশ মিলে জাফলংকে বর্তমান রূপ দিয়েছে।
আপনি কি জাফলং সম্পর্কে আরো কিছু জানতে চান?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন